বহুমুখী সমবায় সমিতির পারস্পরিক দ্বন্দ্বে দিশেহারা ছিন্নমূল জনগোষ্ঠী


রুদ্রবাংলা প্রকাশের সময় : সেপ্টেম্বর ৩, ২০২৪, ০৭:৪৭ /
বহুমুখী সমবায় সমিতির পারস্পরিক দ্বন্দ্বে দিশেহারা ছিন্নমূল জনগোষ্ঠী

শহিদুল ইসলাম, সাভার থেকেঃ
২০০৫ সালে ন্যাশনাল প্লাজা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের অনুকূলে কোর্ট অব ওয়ার্ডস ঢাকা নবাব স্টেট এর মালিকানাধীন বিশ একর জমি কৃষি প্রকল্প স্থাপনের জন্য একসনা লীজ পায় সমিতির সহ-সভাপতি আইয়ুব আলী শিকদারের নামে। এরপর থেকেই চলতে থাকে সমিতির সভাপতি আ.ন.ম নজিবুল্লাহ নাসের ও সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মোস্তাক আহমেদের নিরবিচ্ছিন্ন চাঁদাবাজি, দুর্নীতি ও অনিয়ম।

যার কারনে ২০১০ সালে নির্দিষ্ট একাধিক অনিয়মের প্রমাণ পেয়ে কোর্ট অফ ওয়ার্ডস ঢাকা নওয়াব এস্টেট ন্যাশনাল প্লাজা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের লীজ বাতিল করে দেয়। তৎকালীন শত অনিয়ম ও দুর্নীতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- জনাব আব্দুল মোমেন চৌধুরীর সাথে ১০০ টাকা ও ৫০ টাকার নন জুডিশিয়াল ২টি স্ট্যাম্পে ১৫.০০ একর জমির অবৈধ সাব লীজ চুক্তি তৈরি করে (১,০৫,০০,০০০/-) এক কোটি পাঁচ লক্ষ টাকার চেক গ্রহণ এবং নূর হোসেন চার্লি সহ বিভিন্ন ব্যক্তির নিকট অবৈধভাবে জমির বিক্রি/হস্তান্তর এর অপপ্রয়াস, অপর লিজি পরিবেশ উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশ এর লীজকৃত এবং ভোগ দখলীয় জমির সীমানা প্রাচীর ভেঙে দখল করা। স্টেটের পক্ষের ম্যানেজারের স্বাক্ষর জালিয়াতি করে জনৈক রফিকুল ইসলামের নামে ৯৯ বছরের জন্য একটি জমি দীর্ঘমেয়াদী ভুয়া চুক্তিপত্র কি করে দীর্ঘমেয়াদী লীজ প্রাপ্তির জন্য অফিসের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন দায়ের করা ও সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক এর নামে ১০ একর জমি এককভাবে চিক্তি করার অনৈতিক আবেদন করলে কোর্ট অব ওয়ার্ডস তা নাখশ করা সহ অনেক দুর্নীতি ও অনিয়মের তথ্য আমাদের হাতে আসে। এ ব্যাপারে সমিতির তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের সাথে বারবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করলেও মুঠো ফোনে তাদের পাওয়া যায়নি।

লীজ গ্রহীতা ও সমিতির সহ-সভাপতি আইয়ুব আলী শিকদারের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, এরকম অনেক দুর্নীতির মাধ্যমে তারা কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছে যা বাংলাদেশের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী ছিন্নমূল মানুষের শত কষ্টে অর্জিত শেষ সম্বল। যার কোন হিসাব সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এখনো সমিতির দপ্তরে দাখিল করে নাই। এবং তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতির প্রতিবাদ করলে তারা আমাকে নানাভাবে হয়রানি শুরু করে, সাধারণ সম্পাদক মুস্তাক আমার ছবি ব্যবহার করে আমার নামে মোবাইল সিম তুলে বিভিন্ন মানুষের কাছে চাঁদা দাবি করে। অবৈধভাবে আমাকে বহিষ্কার করে এবং আমার নামে মিথ্যা চেক জালিয়াতির মামলা করে যা পরবর্তী শুনানিতেই খারিজ হয়ে যায়। সেই অনিয়ম ও দুর্নীতি প্রেক্ষিতে সালিশের মধ্যে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সদস্যদের রোশানলে পরে গণপিটুনির শিকার হয় এবং আইয়ুব আলী শিকদারের সাথে প্রতারণা করার দায়ে প্রতারণার মামলায় জেল খাটে। তৎকালীন সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জোকসাজেসে স্থানীয় প্রভাবশালী শহীদুল্লাহ দেওয়ান কোর্ট অফ ওয়ার্ডসের লীজকৃত জমি আত্মসাতের চেষ্টা করে বেদখল করার চেষ্টা করেছিল এবং ২০২৩ সাল পর্যন্ত কোর্ট অব ওয়ার্ডসের জমি বেদখল করে বেহাত করে রাখে।

পরবর্তীতে আইয়ুব আলী সিকদার সদস্য পদ ফেরত পান এবং ২০১৭ সালে উক্ত ২০.০০ একর জমির লীজ গ্রহীতা হিসেবে পূর্ণবহাল হন। বর্তমানে তিনি সমিতির বৈধ সদস্যদের নিয়ে এই জমির সঠিক বন্টনের জন্যে আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

ন্যাশনাল প্লাজা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের পক্ষে জমির লীজ পূর্ণবহালের পর সাবেক সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক তাদের পছন্দ মত অবৈধ ব্যাক্তিদের সমন্বয়ে একটি অবৈধ কমিটির তালিকা করে আবারো নানান দুর্নীতি ও অনিয়মের লিপ্ত হন। এবং অনৈতিক ভাবে কয়েকটি অবৈধ নির্বাচন দেখিয়ে কমিটি দেখিয়ে সমিতির বিপুল পরিমাণের টাকা আত্মসাৎ করে কিন্তু তার কোন হিসেব দাখিল করেনা সাধারণ সদস্যদের কাছে। তাই এখন এই সমিতির শতশত ছিন্নমূল সদস্য তাদের শত কষ্টার্জিত শেষ সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হওয়ার শঙ্কায় আছে। ইতোমধ্যে দের এই অবৈধ কমিটিকে কোর্ট থেকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে।

এখন তারা ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ইতিমধ্যে কোর্ট অফ ওয়ার্ডসের ৪ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে অভিযোগ দাখিল করেছে এবং গণমাধ্যম কর্মী ও সাধারণ মানুষকে বিভিন্ন ধরনের মিথ্যা তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

চলবে…….(ধারাবাহিক)